Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

কম্বাইন হারভেস্টার যন্ত্রের ব্যবহার ও গুরুত্ব

ড. মো. দুররুল হুদা১, বিধান চন্দ্র নাথ২, ড. মো. গোলাম কিবরিয়া ভূঞা৩, সুব্রত পাল৪ এবং শারমিন ইসলাম৫

বাংলাদেশের কৃষি এখনও মানুষ ও পশুশক্তি, সনাতন খামার যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জামের ওপর নির্ভরশীল। গত তিন দশকে জমি কর্ষণ ও সেচব্যবস্থা যান্ত্রিকীকরণের কারণে শস্যের নিবিড়তা শতকরা ১৯৩ ভাগে উন্নীত হয়েছে। শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধির কারণে দুই ফসলের মধ্যবর্তী সময় অর্থাৎ এক ফসল কাটা ও অন্য ফসলের জন্য জমি তৈরি করে ফসল লাগানোর সময় কমে আসছে। যুগ যুগ ধরে আমাদের দেশের কৃষকগণ কাস্তে দিয়ে হাতের সাহায্যে মাঠের ধান কেটে থাকেন। কিন্তু কাস্তে দিয়ে ধান কাটার কার্যক্ষমতা অত্যন্ত কম হওয়ায় ধান কাটতে অনেক শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। নির্দিষ্ট সময়ে ধান কাটতে না পারলে অনেক সময় পরিপক্ব ধান মাঠে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে, কিংবা অতিরিক্ত পেকে মাঠে ঝরে পড়ার কারণে ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যায়। এ ছাড়াও দেশে ধান কাটার ভরা মওসুমে শ্রমিকের অভাব প্রকট হয়ে দেখা দেয়ায় সময়মতো ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে না। শ্রমিকের অভাব এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কোন কোন সময় পুরো ফসলই নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে ফসল কর্তন বাংলাদেশের কৃষির প্রধান সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এতে ধান কাটতে কৃষককে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে এবং উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে কৃষক তার কাঙ্খিত মুনাফা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কম্বাইন হারভেস্টার, রিপার, রিপার বাইন্ডার ইত্যাদি যন্ত্রের সফল প্রায়োগিক ব্যবহারের মাধ্যমে কর্তনকাজ সম্পাদন করা সম্ভব। চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ অন্যান্য উন্নত দেশে যে ধরনের কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহৃত হয় সেগুলো আকারে বড় হওয়ায় আমাদের খÐ খÐ ছোট জমিতে চালানো কঠিন। এছাড়া যন্ত্র চলাচলের জন্য মাঠে রাস্তা না থাকার কারণে এক প্লট থেকে অন্য প্লটে যন্ত্র নেয়া খুবই কঠিন এবং আমাদের দেশ মূলত মাটি পলিমাটি দ্বারা গঠিত (অ্যালুভিয়াল টাইপ) হওয়ায় বড় ভারী যন্ত্র মাটিতে দেবে যাওয়ার কারণে অনেক সময় চালানো যায় না।
এসব সমস্যা দূর করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ফার্ম মেশিনারি অ্যান্ড পোস্টহারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগ দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার সাথে সঙ্গতি রেখে ধান-গম কাটার জন্য হেড ফিড মিনি কম্বাইন হারভেস্টার উদ্ভাবন করেছে, যা দিয়ে একই সঙ্গে ধান-গম কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দী করা যায় এবং খড় আস্ত থাকে। যন্ত্রটি          ১৫-২০ সেমি মাটির গভীরে শক্ত স্তর (প্লাউ-প্যান) যুক্ত কাদামাটিতে চলতে পারে। যন্ত্রটি দিয়ে কম সময়ে অধিক জমির ধান-গম কাটা যায় বিধায় কর্তনোত্তর অপচয় হ্রাস পায় এবং সার্বিক উৎপাদন খরচ কম হয়। তাছাড়া সঠিক সময়ে দ্রæত ফসল কেটে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি থেকে শস্য রক্ষা করা যায়। ফলে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হয় এবং কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।
এটি ডিজেল ইঞ্জিনচালিত এমন একটি যন্ত্র, যা দিয়ে ধান ও গম একই সাথে কর্তন, মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দী করা যায়। শস্য সংগ্রহের প্রধান চারটি কাজ (কর্তন, মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দী) একই সঙ্গে করা যায় বিধায় যন্ত্রটির নাম কম্বাইন হারভেস্টার বলা হয়ে থাকে। সনাতন পদ্ধতিতে কাঁচি দিয়ে শস্য কাটার তুলনায় অল্প সময় ও কম খরচে ধান ও গম কাটা যায়। ফলে সময় ও কায়িক শ্রম লাঘব হয়। যন্ত্রটি ওই সব ফসল কাটার কাজে ব্যবহার করা যাবে  যেগুলোর উচ্চতা মোটামুটি একই রকম ও শীষ/ছড়া গাছের উপরের দিকে থাকে এবং নিচের দিকে অবশিষ্ট অংশ থাকে। সেগুলো হলো- ধান, গম, জব, বার্লি ইত্যাদি।
কম্বাইন হারভেস্টার সাধারণত হেড ফিড ও হোল ফিড দু’ধরনের হয়ে থাকে।
হেড ফিড কম্বাইন হারভেস্টারে শুধু ধানের শীষ মাড়াই হয়ে থাকে এবং খড় নষ্ট হয় না। আমন মওসুমে শুকনো ক্ষেতে খড় আস্ত রাখতে এ যন্ত্রের উপযোগিতা রয়েছে।
অন্যদিকে হোল ফিড কম্বাইন হারভেস্টারে পুরো ধানগাছ মাড়াই হয় এবং মাড়াইকৃত খড় জমিতে এলোমেলোভাবে পড়ে থাকে যা ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা যায় না। বোরো ও আউশ মওসুমে ধানক্ষেতে পানি থাকলে এবং হাওর অঞ্চলে এ যন্ত্রের উপযোগিতা রয়েছে।
কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে ফসল সংগ্রহের প্রধান চারটি কাজ একই সঙ্গে হয়ে থাকে। এ কারণে এক কাজের সঙ্গে অন্য কাজের সমন্বয় না হলে যন্ত্রের কার্যকারিতা ভালো হয় না। পরিবহনের সময় ঝাঁকুনিতে যন্ত্রের যে কোনো অংশের সমস্যা হতে পারে। যন্ত্র মাঠে প্রবেশ করানোর আগে ইঞ্জিন চালু করে গিয়ার নিরপেক্ষ-অবস্থা (নিউট্রাল) অবস্থায় রেখে শস্য সংগ্রাহক অংশে বালুর বস্তা অথবা অন্য ভারী বস্তু স্থাপন করে হেডার উপরে-নিচে ওঠানামা করতে হবে, ইঞ্জিনের গতি বাড়িয়ে দিয়ে কাটারবারসহ ঘূর্ণায়মান অংশে গতি সঞ্চালন করে কোন অংশ থেকে কোনো প্রকার অস্বাভাবিক শব্দ আসছে কি না পরীক্ষা করতে হবে। তারপর যন্ত্র মাঠে প্রবেশ করিয়ে শস্যের উচ্চতার সঙ্গে হেডার ওঠানামা করে হেডার নিয়ন্ত্রক লিভার সমন্বয় করে নিতে হবে। অল্প শস্য কেটে যন্ত্রের মাড়াই ও ঝাড়াই কার্যক্রম দেখে শস্য কাটার প্রস্ততা ঠিক করে নিতে হবে। কাটার প্রস্ততা প্লটের আকার, শস্যের ঘনত্ব ও মাটির অবস্থার ওপর নির্ভর করে ঠিক করতে হয়। মাড়াই ও ঝাড়াই কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে ফসল কাটার মূল কাজ শুরু করতে হবে। চালকের দক্ষতা ও সঠিক নিয়মে যন্ত্র চালানোর ওপর যন্ত্রের কার্যকারিতা ও কর্তন অপচয় নির্ভর করে।
চালানোর সময় করণীয়
কম্বাইন হারভেস্টার জ্ঞাননির্ভর একটি প্রযুক্তি। ফসল সংগ্রহের প্রধান চারটি কাজ একই সঙ্গে সম্পন্ন হয় বিধায় যন্ত্র চালকের যন্ত্রের প্রধান অংশগুলোর কাজ এবং অন্যান্য অংশের সঙ্গে সমন্বয়ের বিষয়ে অবশ্যই প্রাথমিক ধারণা থাকতে হবে। যন্ত্র সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নাই এমন চালক দিয়ে যন্ত্র চালনা যাবে না। শস্যের ক্ষতির পরিমাণ এবং গুণগতমান নির্ভর করে যন্ত্রটির সর্বোত্তম ব্যবহারের ওপর।
ক)   জমি ও ফসলের অবস্থা
মাঠে ফসলের অবস্থা ও জমির প্রস্ততার ওপর শস্য কাটা অনেকটা নির্ভর করে। জমিতে যদি অতিরিক্ত আগাছা থাকে তবে কম্বাইন হারভেস্টার দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারে না বিধায় জমি নির্বাচনের সময় বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে।
া    ৬৫ থেকে ১৩০ সেমি. দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট শস্য কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে কাটার উপযোগী।
া    ১৩০ সেমি. দৈর্ঘ্যরে বেশি শস্যের জন্য হেডার যতটা সম্ভব ওপরে উত্থাপন  করে এবং ৬৫ সেমি এর কম দৈর্ঘ্যরে ফসল কাটাতে যতটা সম্ভব হেডার নিচু করে চালাতে হবে;
া    শস্য ৬০০ এর বেশি কোণে হেলে পড়লে বিপরীত দিক থেকে যন্ত্র আস্তে আস্তে চালাতে হবে।
া    আদ্র ও শিশির ভেজা ফসল কম্বাইন দিয়ে কাটার উপযুক্ত নয়।
া    স¦াভাবিক অবস্থায় ২০ সেমি. এর বেশি পা দেবে যায় এমন জমি কম্বাইন চালানোর উপযুক্ত নয়।
ফসল কর্তনের সময়
া    যখন শীষের ৮০% ভাগের বেশি ধান হলুদ বর্ণের হয়ে যায়, তখন জমির ফসল কাটার উপযুক্ত সময়;
া    ফসল বেশি পাকার পর কর্তন করলে শস্যে ঝরে পড়ে, খড় ভেঙে গিয়ে পরিষ্কারে সমস্যা হয়, ক্ষেত্র বিশেষে অংকুরোদগম হয়ে গুণগতমান নষ্ট হয়, সর্বোপরি ফসলের ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যায়।
া    মাঠের বাম পাশ থেকে এমনভাবে ফসল কাটা শুরু করতে হবে যাতে খড়ও বাম পাশে পড়তে পারে। আইলের উচ্চতা যদি এমন উঁচু হয় যে খড় পড়তে অসুবিধা হবে তাহলে আইলে পাশের ০.৫ মিটার চওড়া করে আগেই ধান হাত দিয়ে কেটে নিতে হবে।
া    ফসল কর্তনের সময় যতটা সম্ভব যন্ত্র সোজা করে চালাতে হবে। বৃত্তাকার বা আঁকাবাঁকাভাবে ফসল কর্তন করলে শস্য ডিভাইডার ঠিকমতো কাজ নাও করতে পারে। শস্য বাঁকা হয়ে কনভেয়ার বেল্টে প্রবেশ করলে খড় ভেঙে গিয়ে ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যায়।
া    ফসল কাটার শুরুর আগে নিশ্চিত হতে হবে যে ফসল যথেষ্ট শুকনা কি না? মাড়াইকালীন শস্যের আর্দ্রতা ২৫% এর বেশি হলে শস্যেদান ভেঙে যাওয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়।
মাড়াই ও ঝাড়াই এর সাথে কাটার প্রস্থতা সমন্বয়
া    ধারকের ভেতর থেকে বের হওয়া খড় পরীক্ষা করে কাটার প্রস্থতা ঠিক করতে হবে।
া    মাড়াইয়ের সময় ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য ফসলের অবস্থা বুঝে সামনের চলার গতি, কর্তনের উচ্চতা, রীল ইত্যাদি সমন্বয় করতে হবে। ফসল একদম নিচ থেকে কাটা উচিত না। এতে মাটির সাথে কাটারবার আটকিয়ে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। ভেজা পাতাযুক্ত খড় মাড়াইয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে;
া    প্রতিদিন কাজ শেষে ভেতরকার ময়লা, খড়কুটা, অন্যান্য বস্তু ইত্যাদি পরিষ্কার করতে হবে। পরিষ্কার করার সময় ইঞ্জিন আগে থেকেই বন্ধ রাখতে হবে, পার্কিং ব্রেক লক করতে হবে।
নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর যন্ত্র পরীক্ষা করা
মেশিনের ঘূর্ণায়মান অংশের কম্পনের কারণে পরিবহনের সময় লোড পরিবর্তন, বিভিন্ন পরিবেশে মেশিন চালানো ইত্যাদির জন্য মেশিনের কারিগরি অবস্থাগুলো খারাপ থাকলে মেশিনের দক্ষতা কমে যায়, বিভিন্ন অংশ নষ্ট হয় বা গুরুতর দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। দুর্ঘটনা রোধ করার জন্য মেশিনটি সঠিকভাবে চালাতে হবে, সকল অংশগুলো পরীক্ষা করতে হবে এবং পরিষ্কার রাখতে হবে। বেল্টগুলো টাইট করতে হবে এবং যখন প্রয়োজন তখন যন্ত্রাংশগুলো পরিবর্তন করতে হবে।
দৈনিক করণীয়
া    এয়ার ফিল্টার, ওয়েল কোলার স্ক্রিন, রেডিয়েটর এবং ইঞ্জিনের সুরক্ষা স্ক্রিন চেক এবং পরিষ্কার করা;
া    ইঞ্জিন ওয়েল, হাইড্রোলিক ওয়েল, রেডিয়েটর এবং পানির ট্যাংক চেক করতে হবে যাতে লিক না হয়;
া    মেশিনের ভেতরে আটকিয়ে থাকা সকল খড়কুটা দূর করা;
া    সকল চেইন এ লুব্রিকেন্ট দিতে হবে, কাটারবার থেকে কাঁদা এবং খড়কুটা দূর করতে হবে, চেইন এবং কাটার এর কোনো ক্ষতি হলে তা চেক করে প্রয়োজনে প্রতিস্থাপন করতে হবে, উপরের এবং নিচের কাঁচির মধ্যে লুব্রিকেন্ট যোগ করতে হবে (প্রতি ২ ঘণ্টা চালানোর পরপর চেইন এবং কাটারের লুব্রিকেন্ট যোগ করতে হবে);
া    চেইনের টান কমে গিয়েছে কি না তা পরীক্ষা করা;
া    থ্রেসার অংশের মাড়াই দাঁত চেক করা, বিপরীত ভাবে মাউন্ট করা বা প্রয়োজন হলে তাদের প্রতিস্থাপন করা;
া    ক্রলারের টান চেক করা এবং প্রয়োজন হলে টাইট দেয়া;
া    রোলার, ক্রলার গাইড, ফ্রেম এবং ট্রান্সমিশনের মধ্যকার কাঁদা, ঘাস অথবা খড়কে সরিয়ে ফেলতে হবে। অন্যথায় ক্রলার সামনে চলতে বাঁধাগ্রস্ত হবে, তার শক্তি হ্রাস পাবে;
া    জ্বালানি ট্যাংক পূর্ণ করা;
া    ইঞ্জিন এবং অন্যান্য অংশ স্বাভাবিক অবস্থায় আছে কি না তা পরীক্ষা করা;
া    নাট-বোল্ট আলগা হয়ে গেলে তা টাইট দিতে হবে।
পরীক্ষণ সতর্কতা
া    ঠাÐা না হওয়ার আগে রেডিয়েটরের ক্যাপ না খোলা। সঠিক নিয়মে ব্যাটারি লোড ও আনলোড করতে হবে। প্রথমে ধনাত্মক চার্জযুক্ত দÐটি (অ্যানোড) সংযোগ করতে হবে এবং যখন ব্যাটারি স্থাপন করা হয় তখন ঋণাত্মক চার্জযুক্ত দÐটি (ক্যাথড) সংযোগ করতে হবে। বিচ্ছিন্ন করার সময় প্রথমে ঋণাত্মক চার্জযুক্ত দÐটি (ক্যাথড) বিচ্ছিন্ন করতে হবে। পরে আনলোড করার সময় ধনাত্মক চার্জযুক্ত দÐটি (অ্যানোড) বিচ্ছন্ন করতে হবে;
া    পরীক্ষা করার সময় এবং রক্ষণাবেক্ষণের সময় ইঞ্জিন বন্ধ রাখা এবং ব্রেক প্যাডেল লক করে রাখতে হবে;
া    ব্রেক চেক করা এবং স্ক্রু এর সুরক্ষা নিশ্চিত করা;
া    নিয়ন্ত্রণ লিভারগুলো চেক করতে হবে;
া    ব্রেক সঠিকভাবে সমন্বয় করে রাখতে হবে;
া    ঘুর্ণায়মান দÐ (শ্যাফ্ট) এবং অন্যান্য অংশগুলো স্পর্শ করা যাবে না;
া    উচ্চচাপের লিকিং ওয়েল স্পর্শ না করা;
া    খুলে রাখা যন্ত্রাংশ সঠিকভাবে রাখেতে হবে যেন শিশুরা এ গুলো নাড়াচাড়া করতে না পারে।
া    চালু অবস্থায় যন্ত্রের কোন অংশে মবিল/গ্রিজ দেয়া কিম্বা          নাটবেøাট টাইট দেয়া যাবে না। এবং কোন যন্ত্রাংশ মেরামত করা যাবে না।
া    দুর্ঘটনা এড়াতে শুধুমাত্র প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চালক দিয়ে যন্ত্রটি চালাতে হবে এবং চালক উপযুক্ত পোশাক (ঢিলা পোশাক পরা যাবে না) পরিধান করে যন্ত্র চালনা করবে।
রক্ষণাবেক্ষণ সতর্কতা
া    অপারেশনের পরে পরিদর্শন ও রক্ষণাবেক্ষণ কার্য পরিচালনা করা। কাজের শেষে মেশিনটি পরিষ্কার করা, পরিদর্শন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কাজ করা এবং সকল সরঞ্জামাদি পরীক্ষা করতে হবে;
া    সমতল মাটিতে মেশিনটি সংরক্ষণ করতে হবে। কাটিং অংশটি নিচু করে রাখতে হবে এবং ব্রেক প্যাডেল লক করে রাখতে হবে;
া    মেশিনটি ঠাÐা না করে এর উপর কভার দেয়া ঠিক না। আগে মেশিনটি ঠাÐা করে পরে প্রয়োজনীয় কভার দিয়ে মেশিনটি ঢেকে রাখতে হবে।
ব্রি উদ্ভাবিত যন্ত্রটি স্থানীয়ভাবে দেশীয় মালামাল দিয়ে তৈরি বিধায় এর দাম দেশের কৃষকের আর্থসামাজিক অবস্থার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। নতুন উদ্ভাবিত যন্ত্রটি কৃষি যান্ত্রিকীকরণে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে এবং এর মাধ্যমে খোরপোশের কৃষি হতে বাণিজ্যিক কৃষিতে উত্তরণ এবং প্রচলিত চাষাবাদ পদ্ধতিকে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে উন্নীতকরণে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। এ কারণে মাঠ পর্যায়ে যন্ত্রটির ব্যাপক সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। য়
১প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ফার্ম মেশিনারি অ্যান্ড পোস্টহারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগ,বিআরআরআই,গাজীপুর, (mdurrulh@hotmail.com;  ০১৭১৯৭৮৩৫৫৮)। ২উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ৩কৃষি প্রকৌশলী, ফার্ম মেশিনারি অ্যান্ড পোস্টহারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগ, বিআরআরআই, গাজীপুর

 

কম্বাইন হারভেস্টার যন্ত্রের ব্যবহার ও গুরুত্ব

কম্বাইন হারভেস্টার যন্ত্রের ব্যবহার ও গুরুত্ব

ড. মো. দুররুল হুদা১, বিধান চন্দ্র নাথ২, ড. মো. গোলাম কিবরিয়া ভূঞা৩, সুব্রত পাল৪ এবং শারমিন ইসলাম৫

বাংলাদেশের কৃষি এখনও মানুষ ও পশুশক্তি, সনাতন খামার যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জামের ওপর নির্ভরশীল। গত তিন দশকে জমি কর্ষণ ও সেচব্যবস্থা যান্ত্রিকায়নের কারণে শস্যের নিবিড়তা শতকরা ১৯৩ ভাগে উন্নীত হয়েছে। শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধির কারণে দুইফসলের মধ্যবর্তী সময় অর্থাৎ এক ফসল কাটা ও অন্য ফসলের জন্য জমি তৈরি করে ফসল লাগানোর সময় কমে আসছে। যুগ যুগ ধরে আমাদের দেশের কৃষকগণ কাস্তে দিয়ে হাতের সাহায্যে মাঠের ধান কেটে থাকেন। কিন্ত কাস্তে দিয়ে ধান কাটার কার্যক্ষমতা অত্যন্ত কম হওয়ায় ধান কাটতে অনেক শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। নির্দিষ্ট সময়ে ধান কাটতে না পারলে অনেক সময় পরিপক্ব ধান মাঠে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে, কিংবা অতিরিক্ত পেকে মাঠে ঝরে পড়ার কারণে ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যায়। এ ছাড়াও দেশে ধান কাটার ভরা মওসুমে শ্রমিকের অভাব প্রকট হয়ে দেখা দেয়ায় সময়মতো ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে না। শ্রমিকের অভাব এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কোন কোন সময় পুরো ফসলই নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে ফসল কর্তন বাংলাদেশের   কৃষির প্রধান সমস্যা হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। এতে ধান কাটতে কৃষককে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে এবং উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে কৃষক তার কাংক্ষিত মুনাফা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কম্বাইন হারভেস্টার, রিপার, রিপার বাইন্ডার ইত্যাদি যন্ত্রের সফল প্রায়োগিক ব্যবহারের মাধ্যমে কর্তন কাজ সম্পাদন করা সম্ভব। চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ অন্যান্য উন্নত দেশে যে ধরনের কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহৃত হয় সেগুলো আকারে বড় হওয়ায় আমাদের খÐ খÐ ছোট জমিতে চালানো কঠিন। এছাড়া যন্ত্র চলাচলের জন্য মাঠে রাস্তা না থাকার কারণে এক প্লট থেকে অন্য প্লটে যন্ত্র নেয়া খুবই কঠিন এবং আমাদের দেশ মূলত মাটি পলিমাটি দ্বারা গঠিত (অ্যালুভিয়াল টাইপ) হওয়ায় বড় ভারী যন্ত্র মাটিতে দেবে যাওয়ার কারণে অনেক সময় চালানো যায় না।
এসব সমস্যা দূর করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ফার্ম মেশিনারি অ্যান্ড পোস্টহারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগ দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার সাথে সঙ্গতি রেখে ধান-গম কাটার জন্য হেড ফিড মিনি কম্বাইন হারভেস্টার উদ্ভাবন করেছে, যা দিয়ে একই সঙ্গে ধান-গম কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দী করা যায় এবং খড় আস্ত থাকে। যন্ত্রটি ১৫-২০ সেমি মাটির গভীরে শক্ত স্তর (প্লাউ-প্যান) যুক্ত কাদা-মাটিতে চলতে পারে। যন্ত্রটি দিয়ে কম সময়ে অধিক জমির ধান-গম কাটা যায় বিধায় কর্তনোত্তর অপচয় হ্রাস পায় এবং সার্বিক উৎপাদন খরচ কম হয়। তাছাড়া সঠিক সময়ে দ্রæত ফসল কেটে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি থেকে শস্য রক্ষা করা যায়। ফলে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হয় এবং কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।
এটি ডিজেল ইঞ্জিনচালিত এমন একটি যন্ত্র, যা দিয়ে ধান ও গম একই সাথে কর্তন, মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দী করা যায়। শস্য সংগ্রহের প্রধান চারটি কাজ (কর্তন, মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দী) একই সঙ্গে করা যায় বিধায় যন্ত্রটির নাম কম্বাইন হারভেস্টার বলা হয়ে থাকে। সনাতন পদ্ধতিতে কাঁচি দিয়ে শস্য কাটার তুলনায় অল্প সময় ও কম খরচে ধান ও গম কাটা যায়। ফলে সময় ও কায়িক শ্রম লাঘব হয়। যন্ত্রটি ওই সব ফসল কাটার কাজে ব্যবহার করা যাবে  যেগুলোর উচ্চতা মোটামুটি একই রকম ও শীষ/ছড়া গাছের উপরের দিকে থাকে এবং নিচের দিকে অবশিষ্ট অংশ থাকে। যেসব শস্যের জন্য ব্যবহার করা যায় সেগুলো হলো- ধান, গম, জব, বার্লি ইত্যাদি।
কম্বাইন হারভেস্টার সাধারণত হেড ফিড ও হোল ফিড দু’ধরনের হয়ে থাকে।
হেড ফিড কম্বাইন হারভেস্টারে শুধু ধানের শীষ মাড়াই হয়ে থাকে এবং খড় নষ্ট হয় না। আমন মওসুমে শুকনো ক্ষেতে খড় আস্ত রাখতে এ যন্ত্রের উপযোগিতা রয়েছে।
অন্যদিকে হোল ফিড কম্বাইন হারভেস্টারে পুরো ধানগাছ মাড়াই হয় এবং মাড়াইকৃত খড় জমিতে এলোমেলোভাবে পড়ে থাকে যা ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা যায় না। বোরো ও আউশ মওসুমে ধানক্ষেতে পানি থাকলে এবং হাওর অঞ্চলে এ যন্ত্রের উপযোগিতা রয়েছে।
কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে ফসল সংগ্রহের প্রধান চারটি কাজ একই সঙ্গে হয়ে থাকে। এ কারণে এক কাজের সঙ্গে অন্য কাজের সমন্বয় না হলে যন্ত্রের কার্যকারিতা ভালো হয় না। পরিবহনের সময় ঝাঁকুনিতে যন্ত্রের যে কোনো অংশের সমস্যা হতে পারে। যন্ত্র মাঠে প্রবেশ করানোর আগে ইঞ্জিন চালু করে গিয়ার নিরপেক্ষ-অবস্থা (নিউট্রাল) অবস্থায় রেখে শস্য সংগ্রাহক অংশে বালুর বস্তা অথবা অন্য ভারী বস্তু স্থাপন করে হেডার উপরে-নিচে ওঠানামা করতে হবে, ইঞ্জিনের গতি বাড়িয়ে দিয়ে কাটারবারসহ ঘূর্ণায়মান অংশে গতি সঞ্চালন করে কোন অংশ থেকে কোনো প্রকার অস্বাভাবিক শব্দ আসছে কি না পরীক্ষা করতে হবে। তারপর যন্ত্র মাঠে প্রবেশ করিয়ে শস্যের উচ্চতার সঙ্গে হেডার ওঠানামা করে হেডার নিয়ন্ত্রক লিভার সমন্বয় করে নিতে হবে। অল্প শস্য কেটে যন্ত্রের মাড়াই ও ঝাড়াই কার্যক্রম দেখে শস্য কাটার প্রস্ততা ঠিক করে নিতে হবে। কাটার প্রস্ততা প্লটের আকার, শস্যের ঘনত্ব ও মাটির অবস্থার ওপর নির্ভর করে ঠিক করতে হয়। মাড়াই ও ঝাড়াই কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে ফসল কাটার মূল কাজ শুরু করতে হবে। চালকের দক্ষতা ও সঠিক নিয়মে যন্ত্র চালানোর ওপর যন্ত্রের কার্যকারিতা ও কর্তন অপচয় নির্ভর করে।
ব্রি হেড ফিড মিনি কম্বাইন হারভেস্টার ব্রি হেড ফিড মিনি কম্বাইন হারভেস্টার এর মাঠ পরীক্ষণ    
চালানোর সময় করণীয়
কম্বাইন হারভেস্টার জ্ঞাননির্ভর একটি প্রযুক্তি। ফসল সংগ্রহের প্রধান চারটি কাজ একই সঙ্গে সম্পন্ন হয় বিধায় যন্ত্র চালকের যন্ত্রের প্রধান অংশগুলোর কাজ এবং অন্যান্য অংশের সঙ্গে সমন্বয়ের বিষয়ে অবশ্যই প্রাথমিক ধারণা থাকতে হবে। যন্ত্র সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নাই এমন চালক দিয়ে যন্ত্র চালনা যাবে না। শস্যের ক্ষতির পরিমাণ এবং গুণগতমান নির্ভর করে যন্ত্রটির সর্বোত্তম ব্যবহারের ওপর
ক)   জমি ও ফসলের অবস্থা
মাঠে ফসলের অবস্থা ও জমির প্রস্ততার ওপর শস্য কাটা অনেকটা নির্ভর করে। জমিতে যদি অতিরিক্ত আগাছা থাকে তবে কম্বাইন হারভেস্টার দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারে না বিধায় জমি নির্বাচনের সময় বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে।
৬৫ থেকে ১৩০ সেমি. দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট শস্য কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে কাটার উপযোগী;
১৩০ সেমি. দৈর্ঘ্যরে বেশি শস্যের জন্য হেডার যতটা সম্ভব ওপরে উত্থাপন  করে এবং ৬৫ সেমি এর কম দৈর্ঘ্যরে ফসল কাটাতে যতটা সম্ভব হেডার নিচু করে চালাতে হবে;
শস্য ৬০০ এর বেশি কোণে হেলে পড়লে বিপরীত দিক থেকে যন্ত্র আস্তে আস্তে চালাতে হবে।
আদ্র ও শিশির ভেজা ফসল কম্বাইন দিয়ে কাটার উপযুক্ত নয়।
স¦াভাবিক অবস্থায় ২০ সেমি. এর বেশি পা দেবে যায় এমন জমি কম্বাইন চালানোর উপযুক্ত নয়।
ফসল কর্তনের সময়
যখন শীষের ৮০% ভাগের বেশি ধান হলুদ বর্ণের হয়ে যায়, তখন জমির ফসল কাটার উপযুক্ত সময়;
ফসল বেশি পাকার পর কর্তন করলে শস্যে ঝরে পড়ে, খড় ভেঙে গিয়ে পরিষ্কারে সমস্যা হয়, ক্ষেত্র বিশেষে অংকুরোদগম হয়ে গুণগতমান নষ্ট হয়, সর্বোপরি ফসলের ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যায়।
মাঠের বাম পাশ থেকে এমনভাবে ফসল কাটা শুরু করতে হবে যাতে খড়ওবাম পাশে পড়তে পারে। আইলের উচ্চতা যদি এমন উঁচু হয় যে খড় পড়তে অসুবিধা হবে তাহলে আইলে পাশের ০.৫ মিটার চওড়া করে আগেই ধান হাত দিয়ে কেটে নিতে হবে।
ফসল কর্তনের সময় যতটা সম্ভব যন্ত্র সোজা করে চালাতে হবে। বৃত্তাকার বা আঁকাবাঁকাভাবে ফসল কর্তন করলে শস্য ডিভাইডার ঠিকমতো কাজ নাও করতে পারে। শস্য বাঁকা হয়ে কনভেয়ার বেল্টে প্রবেশ করলে খড় ভেঙে গিয়ে ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যায়।
ফসল কাটার শুরুর আগে নিশ্চিত হতে হবে যে ফসল যথেষ্ট শুকনা কি না? মাড়াইকালীন শস্যের আর্দ্রতা ২৫% এর বেশি হলে শস্যেদান ভেঙে যাওয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়।
মাড়াই ও ঝাড়াই এর সাথে কাটার প্রস্ততা সমন্বয়
ধারকের ভেতর থেকে বের হওয়া খড় পরীক্ষা করে কাটার প্রস্ততা ঠিক করতে হবে।
মাড়াইয়ের সময় ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য ফসলের অবস্থা বুঝে সামনের চলার গতি, কর্তনের উচ্চতা, রীল ইত্যাদি সমন্বয় করতে হবে। ফসল একদম নিচ থেকে কাটা উচিত না। এতে মাটির সাথে কাটারবার আটকিয়ে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। ভেজা পাতাযুক্ত খড় মাড়াইয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে;
প্রতিদিন কাজ শেষে ভেতরকার ময়লা, খড়কুটা, অন্যান্য বস্তু ইত্যাদি পরিষ্কার করতে হবে। পরিষ্কার করার সময় ইঞ্জিন আগে থেকেই বন্ধ রাখতে হবে, পার্কিং ব্রেক লক করতে হবে।
নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর যন্ত্র পরীক্ষা করা
মেশিনের ঘূর্ণায়মান অংশের কম্পনের কারণে পরিবহনের সময় লোড পরিবর্তন, বিভিন্ন পরিবেশে মেশিন চালানো ইত্যাদির জন্য মেশিনের কারিগরি অবস্থাগুলো খারাপ থাকলে মেশিনের দক্ষতা কমে যায়, বিভিন্ন অংশ নষ্ট হয় বা গুরুতর দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। দুর্ঘটনা রোধ করার জন্য মেশিনটি সঠিকভাবে চালাতে হবে, সকল অংশগুলো পরীক্ষা করতে হবে এবং পরিষ্কার রাখতে হবে। বেল্টগুলো টাইট করতে হবে এবং যখন প্রয়োজন তখন যন্ত্রাংশগুলো পরিবর্তন করতে হবে।
দৈনিক করণীয়:
এয়ার ফিল্টার, ওয়েল কোলার স্ক্রিন, রেডিয়েটর এবং ইঞ্জিনের সুরক্ষা স্ক্রিন চেক এবং পরিষ্কার করা;
ইঞ্জিন ওয়েল, হাইড্রোলিক ওয়েল, রেডিয়েটর এবং পানির ট্যাংক চেক করতে হবে যাতে লিক না হয়;
মেশিনের ভেতরে আটকিয়ে থাকা সকল খড়কুটা দূর করা;
সকল চেইন এ লুব্রিকেন্ট দিতে হবে, কাটারবার থেকে কাঁদা এবং খড়কুটা দূর করতে হবে, চেইন এবং কাটার এর কোনো ক্ষতি হলে তা চেক করে প্রয়োজনে প্রতিস্থাপন করতে হবে, উপরের এবং নিচের কাঁচির মধ্যে লুব্রিকেন্ট যোগ করতে হবে (প্রতি ২ ঘণ্টা চালানোর পরপর চেইন এবং কাটারের লুব্রিকেন্ট যোগ করতে হবে);
চেইনের টান কমে গিয়েছে কি না তা পরীক্ষা করা;
থ্রেসার অংশের মাড়াই দাঁত চেক করা, বিপরীত ভাবে মাউন্ট করা বা প্রয়োজন হলে তাদের প্রতিস্থাপন করা;
ক্রলারের টান চেক করা এবং প্রয়োজন হলে টাইট দেয়া;
রোলার, ক্রলার গাইড, ফ্রেম এবং ট্রান্সমিশনের মধ্যকার কাঁদা, ঘাস অথবা খড়কে সরিয়ে ফেলতে হবে। অন্যথায় ক্রলার সামনে চলতে বাঁধাগ্রস্ত হবে, তার শক্তি হ্রাস পাবে;
জ্বালানি ট্যাংক পূর্ণ করা;
ইঞ্জিন এবং অন্যান্য অংশ স্বাভাবিক অবস্থায় আছে কি না তা পরীক্ষা করা;
নাট-বোল্ট আলগা হয়ে গেলে তা টাইট দিতে হবে।
পরীক্ষণ সতর্কতা
ঠাÐা না হওয়ার আগে রেডিয়েটরের ক্যাপ না খোলা। সঠিক নিয়মে ব্যাটারি লোড ও আনলোড করতে হবে। প্রথমে ধনাত্মক চার্জযুক্ত দÐটি (অ্যানোড) সংযোগ করতে হবে এবং যখন ব্যাটারি স্থাপন করা হয় তখন ঋণাত্মক চার্জযুক্ত দÐটি (ক্যাথড) সংযোগ করতে হবে। বিচ্ছিন্ন করার সময় প্রথমে ঋণাত্মক চার্জযুক্ত দÐটি (ক্যাথড) বিচ্ছিন্ন করতে হবে। পরে আনলোড করার সময় ধনাত্মক চার্জযুক্ত দÐটি (অ্যানোড) বিচ্ছন্ন করতে হবে;
পরীক্ষা করার সময় এবং রক্ষণাবেক্ষণের সময় ইঞ্জিন বন্ধ রাখা এবং ব্রেক প্যাডেল লক করে রাখতে হবে;
ব্রেক চেক করা এবং স্ক্রু এর সুরক্ষা নিশ্চিত করা;
নিয়ন্ত্রণ লিভারগুলো চেক করতে হবে;
ব্রেক সঠিকভাবে সমন্বয় করে রাখতে হবে;
ঘুর্ণায়মান দÐ (শ্যাফ্ট) এবং অন্যান্য অংশগুলো স্পর্শ করা যাবে না;
উচ্চচাপের লিকিং ওয়েল স্পর্শ না করা;
খুলে রাখা যন্ত্রাংশ সঠিকভাবে রাখেতে হবে যেন শিশুরা এ গুলো নাড়াচাড়া করতে না পারে।
চালু অবস্থায় যন্ত্রের কোন অংশে মবিল/গ্রিজ দেয়া কিম্বা নাট-বেøাট টাইট দেয়া যাবে না। এবং কোন যন্ত্রাংশ মেরামত করা যাবে না।
দুর্ঘটনা এড়াতে শুধুমাত্র প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চালক দিয়ে যন্ত্রটি চালাতে হবে এবং চালক উপযুক্ত পোশাক (ঢিলা পোশাক পরা যাবে না) পরিধান করে যন্ত্র চালনা করবে।
রক্ষণাবেক্ষণ সতর্কতা
অপারেশনের পরে পরিদর্শন ও রক্ষণাবেক্ষণ কার্য পরিচালনা করা। কাজের শেষে মেশিনটি পরিষ্কার করুন, পরিদর্শন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কাজ করা এবং সকল সরঞ্জামাদি পরীক্ষা করতে হবে;
সমতল মাটিতে মেশিনটি সংরক্ষণ করতে হবে। কাটিং অংশটি নিচু করে রাখতে হবে এবং ব্রেক প্যাডেল লক করে রাখতে হবে;
মেশিনটি ঠাÐা না করে এর উপর কভার দেয়া ঠিক না। আগে মেশিনটি ঠাÐা করে পরে প্রয়োজনীয় কভার দিয়ে মেশিনটি ঢেকে রাখতে হবে।
ব্রি উদ্ভাবিত যন্ত্রটি স্থানীয়ভাবে দেশীয় মালামাল দিয়ে তৈরি বিধায় এর দাম দেশের কৃষকের আর্থসামাজিক অবস্থার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। নতুন উদ্ভাবিত যন্ত্রটি কৃষি যান্ত্রিকীকরণে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে এবং এর মাধ্যমে খোরপোশের কৃষি হতে বাণিজ্যিক কৃষিতে উত্তরণ এবং প্রচলিত চাষাবাদ পদ্ধতিকে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে উন্নীতকরণে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। এ কারণে মাঠ পর্যায়ে যন্ত্রটির ব্যাপক সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। য়

১প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ফার্ম মেশিনারি অ্যান্ড পোস্টহারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগ,বিআরআরআই,গাজীপুর,(সফঁৎৎঁষয@যড়ঃসধরষ.পড়স; ০১৭১৯৭৮৩৫৫৮)।২ উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ফার্ম মেশিনারি অ্যান্ড পোস্টহারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগ, বিআরআরআই, গাজীপুর।৩ কৃষি প্রকৌশলী, ফার্ম মেশিনারি অ্যান্ড পোস্টহারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগ, বিআরআরআই, গাজীপুর

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon